চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল অটোপাসের ভিত্তিতে প্রকাশ করা হবে না। অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে প্রাপ্ত নম্বর এবং যে পরীক্ষাগুলো বাতিল হয়েছে, সেগুলোর ক্ষেত্রে জেএসসি ও এসএসসি পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে সাবজেক্ট ম্যাপিং করে এ সার্বিক ফল প্রকাশের প্রস্তুতি নিচ্ছে শিক্ষা প্রশাসন। তাই অনুষ্ঠিত পরীক্ষায় কোনো শিক্ষার্থী ফেল করলে ওই শিক্ষার্থী সার্বিক ফলাফলে ফেলই করবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তারা। যদিও এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের প্রস্তাবনা এখনো প্রস্তুত হয়নি।
সোমবার (২৬ আগস্ট) ওই প্রস্তাবনা প্রস্তুতের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তারা এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
চলতি বছরের এইচএসসি ও সমমানের বেশ কিছু বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হওয়ার পর ছাত্র-জনতার আন্দোলনের জেরে স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো গত ২০ আগস্ট বাতিল ঘোষণা করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এমন পরিস্থিতিতে কী উপায়ে এ পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে সে বিষয়ে প্রস্তাবনা প্রস্তুত করার দায়িত্ব পেয়েছিলেন মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সিস্টেম এনালিস্টরা। তবে সে প্রস্তাবনা এখনও প্রস্তুত হয়নি। যদিও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে বাতিল হওয়া এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষাগুলোর ফলাফল ৪০ দিনের মধ্যে প্রস্তুত করে প্রকাশের প্রাথমিক রূপরেখা ঠিক করা হয়েছিল।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক আবুল বাশার বলেন, প্রস্তাবনা এখনো প্রস্তুত না হলেও এ পরীক্ষার ফল অটোপাসের ভিত্তিতে হবে না। এটি তো অটোপাস নয়। তাই অনুষ্ঠিত হওয়ার পরীক্ষাগুলোতে কোন পরীক্ষার্থী ফেল করলে সার্বিক ফলাফলেও তার ফেল আসবে। আর যে বিষয় বা পত্রগুলোর পরীক্ষা বাতিল করা হচ্ছে সেগুলো সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের মাধ্যমে ফল প্রকাশের চিন্তাভাবনা চলছে। প্রস্তাবনা প্রস্তুত করে শিক্ষা বোর্ডগুলোর পক্ষ থেকে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
তিনি আরও বলেন, এইচএসসির ফল প্রকাশ নিয়ে নানা রকম প্রস্তাবনা আমাদের কাছে আসছে। আমরা একদিন বসেছিলাম। প্রস্তাবনাগুলো যাচাই-বাছাই করেছি। তবে এখনো কাজ বাকি। এরমধ্যে শুরু হয়েছে বন্যা। আপাতত আমরা বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোর তথ্য সংগ্রহ করছি। সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে এ প্রস্তাব চূড়ান্ত করা হবে।
জানতে চাইলে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড সমন্বয় কমিটির সভাপতি ও ঢাকা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মহোদয়দের যে প্রস্তাবনা প্রস্তুত করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল, সেটি এখনও হাতে এসে পৌঁছায়নি। তাই ফলাফল কিভাবে নির্ধারণ করা যাবে সে বিষয়ে এখনই মন্তব্য করা যাচ্ছে না। তবে, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মহোদয়রা যদি অনুষ্ঠিত পরীক্ষাগুলোতে পরীক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বর বিবেচনা করে ফল প্রকাশের প্রস্তাব করেন; সেক্ষেত্রে কোন পরীক্ষার্থী অনুষ্ঠিত হওয়া পরীক্ষায় যে কোন একটি বিষয়ে ফেল করলে তার সার্বিক ফলাফল ফেলই আসবে।
তিনি আরও বলেন, ওই প্রস্তাবনাটি পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক ও সিস্টেম অ্যানালিস্টদের কাছ থেকে আমাদের কাছে আসলে তা যাচাই-বাছাই করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয়, সিনিয়র সচিব মহোদয়ের অনুমোদনক্রমে তা চূড়ান্ত হবে। এরপর চূড়ান্তভাবে বলা যাবে-কী উপায়ে এইচএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে।